অ্যালিসিয়া এলসবেথ স্টলিংস এর দুইটি কবিতা
১.
নরকে অদিসিয়াসের সঙ্গীসাথীরা
যদিও আমাদের জন্য সামান্য সেঁকা রুটি অবশিষ্ট ছিলো,
নিয়ম ভেঙে সেটুকু খেয়ে ফেলার মত অর্বাচীনতা কেউ দেখায় নি। অ্যাপোলোর একপাল পশু ধীরেসুস্থে চরে বেড়াতো –
প্রতিটি ষাঁড় ট্যাঙ্কের মত বিশাল!
নিজের নামটা তারার আখরে লিখে দিতে, অর্থাৎ একজন কিংবদন্তী হবার পিছনে পড়ে থাকে চল্লিশটি বছরের যাতনা; একটি প্রাচীরের অর্থহীন অবরোধের ইতিহাস।
পৃথিবীর প্রাক্তনভাগে আমরা বেঁচে ছিলাম ক্ষুধায়। ক্রমশ নিজেরাই নিজেদের গতিরোধ করতে করতে একসময় আমাদের পতন শুরু হলো; এইসব উপত্যকার বুকে। সেই মুহুর্তে আবিষ্কার করলাম – আমরা নিজেরা কতটা অর্বাচীন; ক্ষুধার প্রেরণায় কতটা ক্রুদ্ধ!
মূলঃ দ্য কমপ্যানিয়নস অব অদিসিয়াস ইন হেইদেস – অ্যালিসিয়া এলসবেথ স্টলিংস (‘The Companions Of Odysseus In Hades’ by Alicia Elsbeth Stallings)
২.
গোলাপমুখো পেরেক
“একটা পেরেক কি বানিয়ে দিতে পারো?” – স্বর্ণাভ চুলের কিশোরটি প্রশ্ন করে বসলো। তখন আমাদের কামার করলো কী, হাপরের টানে জ্বলতে থাকা অঙ্গারের ধিকিধিকি আগুনের গভীরে একটা লোহার রড ঠেসে দিলো। তারপরে অপেক্ষা, কতক্ষণে সেটা আগ্নেয়গিরির লাভার মতন প্রজ্বলিত হয়ে ওঠে। কালবৈষম্যের অনেক আগে, অর্থাৎ যান্ত্রিকতা মানুষের হাতের কাজগুলো ছিনিয়ে নেওয়ার আগে আমাদের এই কামার ছিলো মূলত একজন দেবতা।
তার ধারালো, নগ্ন সন্ধিকাল গতিময় হতো… হাতুড়ির সুরের সাথে একাকার হয়ে। আমাদের কামারের কার্যকারিতা অভিষিক্ত হতো – গোলাপের ধারনায়; এসব চতুর্মাত্রিক বিষয়াদির প্রতিটি ধার আর মুখমণ্ডল পাপড়ির প্রকোপে গোপন…
ওখানে বাতাসের শরীর নগ্ন- মৃদুতায়। আমাদের কিশোরটির স্বর্ণাভচুলো মা কাশির দমকে ঝুঁকে পড়ে ইতস্তত ঘুরতে থাকে। একদা কর্মব্যস্ততাকে ধরে বেঁধে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিলো – ভস্মের আঘাতে কৃষ্ণবর্ণা, ঘামে জর্জর হয়ে থাকা সৌন্দর্যের সাথে।
মূলঃ দ্য রৌজহেইড নেইল – অ্যালিসিয়া এলসবেথ স্টলিংস (‘The Rosehead Nail’ by Alicia Elsbeth Stallin)
অনুবাদ: জয়ন্ত বিশ্বাস