নাদিয়া জান্নাতের তিনটি কবিতা
বেদনা দীর্ঘজীবী হইতেছে যেহেতু….
আধমরা শালিকরে বুকে পুষে বড় আরাম পাইতেছি।
ঝিলিক দিয়া রোদ আসতেছে।
সেই রোদে শালিকের জন্যে ধান ছিটাইতেছি
শালিকটা নাচতে নাচতে বুকের ভেতর আসতেছে,
কিন্তু কোন ধান খাইতেছে না।
আমি অবশ্য জোরাজুরি করতেছি—
সে শুনতেছে না। সে কেবল নাচতেছে আর নাচতেছে—
আমার হঠাৎ করেই মনে হইলো এটা তো অঘ্রাণ মাস।
ধানকাটা হয়ে গেছে।
এখানে সেখানে মাঠে— ঘাটে ধান শুকানোর বেলা এখন।
আধমরা শালিকটার আর ধানের অভাব নাই।
তবুও, ধানের লোভে পাখিটা যে আসতেছে, বুকের ভেতর
এইটা ভেবে প্রচুর আনন্দ পাইতেছি আমি
আমলনামা
তোমারে যে দুনিয়ায় রেখে আসছি সেটা জান্নাত।
বসন্ত শেষের বাতাস
আর
হলুদ কুটুম পাখি
মাঠের মধ্যে পিঠ বাঁকায়া থাকে সেখানে
তুমি ছলনা করতে পারো জুঁই গাছের সাথে।
মখমল চুলের নারী পাশ দিয়ে গেলে তাকে
ইশারা দিতে পারো; কৌশলে
জান্নাতে থেকে হাবিয়া দোজখের কথা
মোটেও ভেবো না, লক্ষ্মীটি ।
চিলমারি
ক.
(হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারির বন্দর এ রে…)
শীতকালে— দুপুর আরো ঝিমিয়ে গেলে—আমরা মা—মেয়ে বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে চুলে তেল দিতাম যখন ; তখন অঘ্রাণের রোদ আসতো দক্ষিণ থেকে। দক্ষিনে আস্ত একটা ব্রহ্মপুত্র। মা বলতেন, এমন দিনে— আলোর কমলা রঙ খুব আস্তে আস্তে মলিন হয়, তারপর চালভাঙ্গা টিনের বাড়িতে মেজাজ চড়া করে শীত নামে
শীতকাল আম্মার কাছে মামাতো বা খালাতো ভাই—বোন গোছের কিছু একটা ; চিলমারিতে যার নানা বাড়ি। মখমল জামা পরে— রমনা বাজার থেকে গুঁড়ের জিলাপী কিনে সে আমাদের বাড়ি বেড়াতে আসে
আম্মার আঁকাবাঁকা ব্রহ্মপুত্রে আমি আমি একবার ডুব দিয়েছিলাম, উঠতে পারি নাই।