কবিতা 

মাহমুদ সিফাতের ৫টি কবিতা

  খড়া এই অনুর্বর মগজ থেকে মুছে রেখে যাও তোমার নাম   অথবা, শান দাও কোদালে; আমাকে খুঁড়ে বের করে আনো জল ভেজাও প্রেমে ওড়াও প্রেমের বেঢপ রঙিন ঘুড়ি।   তুমিও ভিজো, ডুবে থাকো আকণ্ঠ আমার ভেতরে ঘটুক তোমার আমৃত্যু নিমজ্জন।      এবং শরৎ আমার আয়নায় ভেসেছে শরৎ, লেগেছে দূরবিস্তৃত নীল তবু সাদা মেঘ ভেসে ভেসে আসে অযাচিত আলাপন ঝড়ের মতো ক্ষুধায় ভেঙে পড়ছে উদর মিথ্যে ছাড়া খাদ্য বলে কিছুই নেই   ফোটেনি ফুল বাগানে আমার আকাশে ওঠেনি চাঁদ ঝিঙেফুলের মাচা ভেঙে কে গড়েছে প্রাসাদ   স্কেচবুকে মারা যায়…

Read More
কবিতা 

বায়েজিদ বোস্তামীর ৫টি কবিতা

ঘোড়ারে আমার নিশিতে পায় নগরীর চারিদিকে পরিখা নাই দেওয়ালের সুরক্ষা দিতে ফটক ভেঙে শত্রু ঢোকে না কোনও আমিই শত্রু তাঁবুর দিকে ছুটে যাই বেকুব ঘোড়ারে আমার নিশিতে পায় এমনকি দিনেদুপুরেও ওহে, বেকুব ঘোড়াটি আমার নগর দেওয়ালের ওপারে কী আছে এমন? কী আছে শত্রু তাঁবুতে? কী সুস্বাদু ঘাস-ছোলা-নুন?   আমি যে মরি না তাই আমার মরে যাওয়া দরকার অথচ মরিবার মুরোদটি নাই এহেন দশায়, আমারে, বুচ্ছেন বিবিধ মশকারি নিয়া বেঁচে থাকা লাগে জীবনে ঘটে যাওয়া, ঘটমান ও ঘটিতব্য- কান্না মশকারি কাম মশকারি প্রেম মশকারি আমি যে মরি না তাই এই মশকারি…

Read More
কবিতা 

সোহরাব ইফরানের ৫টি কবিতা

  ঘোড়াটি শুধু আড়াই গর্জায় মৃত বলে কোন ছদ্মনাম নেই দাবার ঘরে বসা যায় এমন সব পুরুষ—ঘোড়া—কিস্তি অর্বাচীন হতে ভালবাসে তোমার আঙুলের পাশে এ মেদুর সভ্যতা—দাবাঘরে কোন রাণী থাকে না আঙুল থেকে নেমে আসে যুদ্ধগুলো সরে পড়তে হয় দাঁড়াতে হয় সরে পড়তে হয় দাঁড়াতে হয় রক্ত নেই ধোঁয়া নেই শব্দ নেই সাদাকালো একটি রণক্ষেত্র   বৃক্ষদের আত্মহত্যা প্রবণতা নিয়ে ডাকনামে ডাকো অথচ শুনতে পাই না—বহুদিন বধির যেন এই পলি; ঢেউগুলো এখানে এসে শুকিয়ে যায়—প্রবাহ থেমে গেলে কেউ আর দেখে না—শুধু হেঁটে আসে পিঁপড়ে আর পিঁপড়ে; বাঁক বদল করতে করতে নরসুন্ধা গিলে…

Read More
কবিতা 

চুইংগাম বিষয়ক কবিতা || আল নোমান

০১ তেলের বোতলে উঁকি দিতেই মাথাটা বোতলের মধ্যে পরে গ্যালো। বোতলে সোনামুখি সুঁই ছিল। আমার চোখে গেথে আছে। ছিপিটা দিয়ে গলা আটকে দাঁড়িয়ে আছি। ০২ দুহাতে পুঁইডাটা। আমি পুঁইলতাটার খুব কাছে দাঁড়িয়েছি। ভয় লাগছে। অযত্নের পরেও লতাটা বেড়ে উঠেছিল। হিংস্র কুকুরের মত ছিরে এনেছি লতা-পাতা।আমি কি পুঁইলতাটার কাছে আরো কিছুক্ষণ বসে থাকতে পারি! ০৩ কবুতরের হাঁটে এক পায়ের ঘোড়া দেখে কান থেকে একহালি লালপিঁপড়ে বেরিয়ে এলো। সব কবুতর সব মানুষ কিছুক্ষণ আমাকে দেখছিল। পাশের পুকুরে ভেসে ছিল কিছু ডাবের খোসা, আর দেবীর দুটি হাত। আমি আমার চোখ দুটো খুলে লুঙ্গির…

Read More
গদ্য গল্প 

শিবরাজ চৌধুরীর দুটি গল্প

কুড়ায়ে পাওয়া কিচ্ছা লেখালেখি হইল না বইলা শেষমেশ চুড়ির ব্যবসা ধরলাম। কয়েক ডজন চুড়ি বেচা হয় প্রতিদিন, উত্সবে পার্বণে বেচি হাজার হাজার; বান্ধা খদ্দেরও আছে কয়জন। সব মিলায়ে খুব একটা খারাপ নাই আমি। বেশ্যা থাইকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা- মোটামুটি সব মহলের হাতই আমি ধরতে পারি- এরাও আমারে বিশ্বস্ত জাইনা হাত দেয়- নরম কোমল কেতাদুরস্ত হাত। এদের কারো হাত ফর্সা, কারো রোদপোড়া, কারো ঘন বাদামী। হাঁটু ভাঁজ কইরা বসে তারা, মাংসপট্টির কুকুরের মত একাগ্রতা ও সময় নিয়া চুড়ি দেখে। কাঁচের চুড়ি, কাঠের আর প্লাস্টিকের চুড়ি, এমনকি লোহার চুড়িও আমি রাখি- এদের ক্যান…

Read More
কবিতা 

অক্ষর প্রবালের ৫ টি কবিতা

বুনট নীতি বিচ্ছিন্ন সমুদ্র মাদকতায় উড়ে গেছে নেশাতুর ঠোঁট তাই পথ হারিয়ে পা খুঁজে নেয় জুতোর গভীরতা। পথ কখনো বোঝে না ক্ষুধার গৌরচন্দ্রিকা- শুয়ে থাকে ঘাসের কান ঘেঁষে বিমূর্ত পথচারীর পা’য়। আবেগ অতি আঁঠালো কিসিমে’র ছাই গুটি হয়ে জমে যায় আঁটুলির ন্যায়। সঞ্চিত দুঃখ তবু খুঁজে ফেরে ঠোঁটের আয়ুরেখা। যার গোড়ায় লুকিয়ে আছে আয়ুর্বেদি প্রেম। কিন্তু জানে না- মাছ বিনিময়ের দুপুরে এদেশে মাছের গন্ধ- ‘হারাম’।   ফ্যাকাশে কাহন দৃশ্যের শেষে দাঁড়ি দিয়েও তার শেষ নামছে না এখনো। এখনো রঙিন কিশোর তুফান চারিদিকে সায়ানাইড ছিটিয়ে সব স্তব্ধ করে দেবে একদিন। তবুও…

Read More
কবিতা 

মাহ্ফুজ সরকারের দুটি কবিতা

এপিটাফ আমার সামনে সারি সারি জীবিত কঙ্কাল , টাকার অমসৃণ ত্বকে খোঁজে সুঘ্রাণ, তাৎস্বরে চেঁচ্ছাছে, গদিতে বসে বীর্য পান করা মন্ত্রীর দল। রাণী চলে গেছেন ঈশ্বরের আসনে, আসরের চারপাশে পাওয়া গেছে তেলের খনি। স্তন সর্বস্ব নারী ধোয়া তুলসিপাতা, বাজার ভর্তি হাওয়াই বেলুন। শুদ্ধতায় ভাড়ামি, তত্ত্ব-ফত্ত্ব যত্র-তত্র মূত্রপত্র। আমার সামনে সারি সারি জীবিত কঙ্কাল   দৃশ্য -ভ্রম দেখতে পারা অন্ধত্বের মূল, দৃশ্য আমাদের বিচ্ছিন্ন করে। আলোতো ভূমিষ্টই হয় আঁধারের গর্ভ হতে। আলো সমগ্রের উপরে পড়ে না বরং ক্ষুদ্রতাকেই স্পষ্ট করে। আমরা যা দেখি, যেভাবে দেখি তাই আমাদের অন্ধ করে। একটি দেখা…

Read More
কবিতা 

নাহিয়ান আতিকের পাঁচটি কবিতা

০১ আমাদের একাকী একাকিত্বকে অস্বীকার করে প্রায়শই দেখি জলে ভাসছে হাসের মত সাদা একটা বক্ষবন্ধনী, তার চারপাশে নীল-কাল মাছেদের রাজ্য। তোমার পাশে শুয়ে আমি ভেড়া গুনি আর চুমু খাই। চুমু খেলে ঘুম আসে তাই আবার ভেড়া গুনি কোনদিন নেকড়ে এলে আমরা সঙ্গম করি নৃত্যের তালে তালে যিশুর চেহারার স্নিগ্ধতার মত এক নরম ভোরে কফি ভর্তি বাথটাবে শুয়ে দেখি আমাদের ঘরদোর ভেঙে যায় । আমরা ঘর তুলতে পারি না তাই নতুন নতুন দেয়াল তুলি। সম্পর্কেরা একটু একটু করে দূরত্ব তৈরি করে আমি চাই বা না চাই একমাত্র মৃত্যুই প্রতিদিন একটু একটু…

Read More
গদ্য প্রবন্ধ 

আবার গুণকীর্তনের পালা : কোয়ালিটির প্রায়োরিটি ।। কলিম খান (প্রথম পর্ব)

‘নাম’ (কোড্) মাহাত্ম্য বর্ণণ: ‘ঋগবেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ, চতুর্থত অথর্ববেদ, পঞ্চমত ইতিহাস পুরাণ, ব্যাকরণ, শ্রাদ্ধতত্ত্ব, গণিতবিদ্যা, দৈব-উৎপাত বিষয়ক বিদ্যা, কালবিদ্য, বাক্যোবাক্য, নীতিশাস্ত্র, নিরুক্ত, ব্রহ্মবিদ্যা, ভূতবিদ্যা, ক্ষত্রবিদ্যা, নক্ষত্রবিদ্যা, সর্প ও দেবজন বিদ্যা… এসবই নাম। নামের উপাসনা কর। যিনি নামকে ব্রহ্মরূপে উপাসনা করেন- নামের গতি যতদূর, ততদূর তিনি ইচ্ছানুযায়ী যাইতে পারেন।’ (ছান্দ্যোগ্য উপনিষদ ৫২০: ৪,৫) ‘…গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা।’ -(সুকুমার রায়)   সৈয়দ মুজতবা আলী আলি একবার কয়েক বছরের জন্য আরব দেশে গিয়েছিলেন, অধ্যাপকের চাকরি নিয়ে। থাকতেন সেখানকার একটি শহরে, এক আরবদেশীয় ভৃত্য রহমান-এর তত্ত্বাবধানে। আলিসাহেবের ভাষ্য অনুসারে, রহমান তাঁর হয়ে ‘ফ্রম সুমেন্ডিং টুখুনখারাবি’ অর্থাৎ ‘জুতো…

Read More
কবিতা 

রাশা নোয়েলের পাঁচটি কবিতা

১. সামাজিক মেলামেশা এইঃ সর্বৈব মানুষকে নিয়ে কবিতা লেখা হয়ে গেছে অসংখ্য, অগুনতি কবি। রাফ বৈচিত্র্যময়, কলমের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভে কবিতার সুচতুর দাবাড়ু হবার আগে একজন কবি-র শব্দের পর শব্দের গ্রুনফেল্ড ডিফেন্স বিস্মিত করে নিতান্ত পৃথিবীকে৷ চৌষট্টি ঘর সাজিয়ে পরখ করে দেখা যেতে পারে তার মানবীয় নমুনা৷ এদের মধ্যে প্রকৃতি ব্যতীত আর কোনো ব্যতিক্রমী কিছু চিন্তার সন্নিবেশ নেই। একজন মানুষ নেক থাকতে থাকতে শয়তান হয়ে উঠতে পারে একজন কবি শয়তান বেল্লিক থেকে দ্রুত হয়ে যায় কবিতার সুচতুর দাবাড়ু। এই আমূল পরিবর্তন শোভা বর্ধন করে প্রকৃতির। শেষতক সামাজিক মেলামেশার অভ্যাসটা আমৃত্যু সরব…

Read More