কবিতা 

মদসংখ্যা- ম্যেরী ক্রিসমাস এবং একপেগ চিয়ার্স…! ।। হেনরী স্বপন

আজকাল প্রতিবছর এমোনই হয়, আমার স্ত্রী-কন্যা যখন ক্রিসমাসের রাতে বিশেষ প্রার্থনার জন্য চার্চে চলে যায়, আমি তখন একলা ঘরে দামী কোনও ব্রান্ডের ওয়াইন খেতে খেতে ম্যোৎজার্ট আর মান্নাদে’র কণ্ঠের শ্যামা সংগীত শুনেই এই সময়টা দারুণ কাটাই। অন্তত বিগত পঁচিশ/ ত্রিশ বছরের ক্রিসমাস উদযাপনের নিয়মিত ফিরিস্তি আমার এতাটুকই। কারণ, পাদ্রীদের পরিশুদ্ধ মন্ত্রে উচ্চারিত খ্রিস্ট জন্মের মানব সৃষ্ট এই মহোৎসবে আজকাল আর চার্চের দুয়ার মরাই না কবে থেকে? সে কথা বলা খুবই মুশকিল। তবে, কৈশোরে কিংবা প্রক-যৌবনে গির্জার ঢং-ঢং শব্দে বেজেছি আনেক…! যদিও পার্থিব সেই ঝড়ো বাতাস এখন আর আমার কক্ষপথে নেই।…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- খোলা চোখে তাকিওনা ঘোলা হয়ে যাই ।। সাকিব শাকিল

কত পঁচনের পর তুমি যে বিষ হয়ে যাও বুকে? -শরীরের ভেতরে আমার প্রতিক্রিয়া। তোমরা মানুষ কেন যে আমাকে বুকে রাখো শুধু জ্বলে যাওয়ার জন্য। -আমরা তো তোমাকে গ্রহণ করে শীতল হয়ে উঠি। আমাদের বুক থেকে উড়ে যায় রঙবেরঙের পাখি। বোতলে বন্দি থেকে অসহ্য গুমোটে তুমি সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছো প্রিয়। আসো তোমাকে পান করি। পৃথিবীর হিম হাওয়ায় আমার বুকে জ্বলে ওঠো তুমি। আসো, প্রিয়তমা আসো। – তাড়াহুরো করো না। সকল নির্যাসের পরেই থাকে জগতের ভ্রম। দ্যাখো, জগৎ মাতালেরা মেতে উঠেছে দ্রিম দ্রিম উৎসবের মাঝে। আর তোমার বিগতরা খিলখিল হেসে যাচ্ছে সরাইখানার…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- ঋত্বিকের নতুন বাড়ি ।। জুবায়ের দুখু 

ভাঙ্গেরা,  পাবনা। কাশবন, বালুচর। চল ভবা, পালাই। তিতাসের জলে গা ভাসিয়ে চল হারিয়ে যাই নাগরিকের কোলাহলের বাইরে- দূরে কোথাও। ঋত্বিক হারাতে চায়, লক্ষ্মীর কাছ থেকে অনেকদূর। বুঝলে লক্ষ্মী, টাকা থাকবে না কাজটাই থেকে যাবে। তুমি দেখে নিও। তুমি দেখে নিও। সাঁইথিয়াই টালমাটাল ঋত্বিক। হাতে বাঙলা মদের বোতল– উসকোখুসকো চুল চোখে চশমা। দুলিয়ে দুলিয়ে হাঁটছে কলকাতার অলিগলি। লাল সুতার কিংবা পাতার বিড়ি ফুকছেন। চারপাশ ধোঁয়ায় ছয়লাব। নতুন বাড়ির খোঁজে ঋত্বিক চলে গেলেন সুবর্ণরেখার পাড়ে। মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা তারার দুঃখ নিয়ে এক জীবন অতিবাহিত করেছেন। কখনো জগদ্দলের প্রেমে হয়েছেন পাগলাটে ঋত্বিক।…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- ‘ধন্য আমি ধন্য হে মাতাল তোমার জন্য হে’ ।। টুম্পা ধর

পৃথিবীর যেকোনো সৌন্দর্যকে অবাধে ছোঁয়া নিষিদ্ধ করার চিন্তা থেকেই হয়তো অমৃত সমান একটা বিশেষ পানীয়কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সমাজ সংসারে বিশেষ বিশেষ আবিষ্কারগুলোকে বেশ কড়া নিরাপত্তায় সযত্নে আগলে রাখা হয়। কারন অতিমাত্রায় যেকোনো জিনিস তার অস্তিত্ব হারায়। মানুষও তার উর্দ্ধে নয়, তাই যেকোনো বিশেষ পরিবেশে মানুষ নিজে নিজেকে আগলে রাখে, সেই সঙ্গে আরও যে সকল বস্তুকে আগলে রাখে তার মধ্যে মদ বা বিশেষ পানীয়ও অন্যতম। তাই মদকে কেন নিষিদ্ধ করা হলো, তা নিয়ে ভেবে আমার কখনো মন খারাপ হয় না। স্বচ্ছ কাচের বোতল হোক আর গ্লাস কিংবা শখের মাটির…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- শিকার ।। মুম রহমান

Every form of addiction is bad, no matter whether the narcotic be alcohol or morphine or idealism. – কার্ল গুস্তাভ জাং (১৮৭৫-১৯৬১), সুইস মনোবিজ্ঞানী ও চিকিৎসক তাতি বাজারের কাছের এই বাড়িটা এখন পরিত্যক্ত। যে কোন সময় ভেঙে পড়বে। বাড়িটার মাংস নাই, কেবল হাড্ডি দেখা যায়। তবুও দুয়েক জায়গায় পুরনো জৌলুসের ছাপ লুকানো আছে। যেমন ধরা যাক ভাঙা রেলিংয়ের কারুকাজ। সেটুকুই জানিয়ে দেয় এ বাড়ি সাধারণ কিছু ছিলো না। কে জানে কার বহু সাধ আর সামর্থের সমন্বয়ে একদা বানানো হয়েছিলো এই জমিদারি মেজাজের বাড়ি। বাড়ির রঙ আর পলেস্তরার মতোই বিলুপ্ত জমিদারি…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- অতলান্ত ।। আতিকুর রহমান হিমু

‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে মেলে দিলাম গানের সুরের এই ডানা’ সন্ধ্যাটা অন্যমনস্কো ভাবে হাঁটছে রাত্রির গভীরে। শুক্লা পক্ষের পথে পথে হলুদ বাদামি পাতা ও শীতবৃক্ষের ছায়া কঙ্কাল। ভাড়া বাড়ির তেতলার ছাদে দাঁড়িয়ে আছি। আমার চোখের ওপর প্যান্টারালি আকাশ। অন্ধকারে হাবুডুবু করছে বিচিত্র সব রঙ। বিষণ্ণতা ছুঁয়ে আছে পাতাও নীড়ে ফেরা পাখিদের পালক। শৈশবে প্রায় বিকেলেই আমি দরজায় দাঁড়িয়ে ফেরারি পাখিদের কোলায় ফেরা দেখতাম, পাখিদের ভিন্ন রঙ ভিন্ন স্বর জানা না জানা বিচিত্র সর্বনাম। আজও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় পাখিপাড়া বেড়াতে যাই। পাখি পাড়া কি সন্ধ্যে হয়?…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- বৃষ্টি ।। সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ

Art thou abroad on this stormy night on thy journey of love, my friend? The sky groans like one in despair. I have no sleep tonight. Ever and again I open my door and look out on the darkness, my friend. I can see nothing before me. I wonder where lies thy path. By what dim shore of the ink-black river, By what far edge of the frowning forest, Through what mazy depth of gloom art thou threading thy course to come to me, my friend? (Song 23, Song Offerings…

Read More
গদ্য প্রবন্ধ 

আর্চার কেন্ট ব্লাড।। আহমেদ মুনওয়ার মাহবুব

আর্চার কেন্ট ব্লাড বাঙালিদের কাছে সুপরিচিত তার ব্লাড টেলিগ্রামের মাধ্যমে । মার্কিন কূটনীতিক আর্চার কেন্ট ব্লাড ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কনসাল জেনারেল নিযুক্ত হন। যদিও এর আগে ষাটের দশকের শুরুতে তিনি ঢাকায় কূটনৈতিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ব্লাড ছিলেন মার্কিন সরকারের সাথে বঙ্গবন্ধুর যোগাযোগের সূত্র। পাকিস্তান বাহিনীর নৃশংসতা বন্ধে মার্কিন সরকারকে ব্লাড যে কঠোর ভাষায়  টেলিগ্রামটি পাঠান তা ‘ব্লাড টেলিগ্রাম’ নামে খ্যাত। ১৯৭০ সালের মার্চে ব্লাড যখন ঢাকায় আসেন তখন সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছিলো। দূতাবাসে বসে নির্বাচন পর্ব পর্যবেক্ষণ করাই ছিলো ব্লাডের কাজ এবং সেই অনুযায়ি…

Read More
গদ্য প্রবন্ধ 

ইতিহাসে আরমানিটোলা মাঠ।।আহমেদ মুনওয়ার মাহবুব

আরমানিটোলা মাঠ নিছক মাঠ নয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপুর্ণ ঘটনার সাক্ষী এই মাঠ। এই মাঠের গল্প বলার আগে আমরা আমরা একটু পেছনে চলে যেতে চাই।  ষোল শতকের   আর্মেনিয়া পারস্যের সাফাভি রাজবংশের অন্তর্ভুক্ত হলে আর্মেনিয়ানরা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ১৮ শতকে মূলত ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ঢাকায় তাদের আগমন। ঢাকায় তখন কাঁচা পাটকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বানিজ্য সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিলো। ঢাকা থেকে নদীপথে কাচা পাট পাঠানো হতো কলকাতায় । ঢাকার পাটকে ঘিরে কলকাতায় গড়ে উঠেছিলো বড়  বড় সব জুটমিল। তাই পাটের ব্যবসায় মন দিয়েছিলেন ঢাকার আর্মেনীয়রা। আব্রাহাম পোগজ, এম ডেভিড, জে…

Read More
কবিতা 

তাঁতার দস্যুর দল ।। সোহরাব ইফরান

(ক) ‘কবিবর মান্য হলা যবে আপন পিতার করোটিতে মদ্যপান করি’—হিজল জোবায়ের আধুনিক/ উত্তরাধুনিক ভাষাজ্ঞান এর সাথে পরিচিত হয়েছিলাম কাগজে যার কবিতা পড়ে, তিনি হিজল, কিংবা পদার্থ নদী বল বেয়ারিং। চরাচর ব্যাপ্তির দিনে তরুন কবিদের সাথে হিজল জোবায়ের এর এভাবেই সাক্ষাৎ ঘটে। “no distance can weigh you down, you come flying, facinatel, and at last lasting for light, poor moth, you perish in the flame.” “একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে পুনরায় ডুবে গেলো- এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে বেদনায় গাঢ় রসে আপক্ক রক্তিম হলো…

Read More