ফারিয়া মতিন ইলা’র দুইটি কবিতা

স্বপ্ন নেই

এইতো এইখানে বসে হয়তো কিছুক্ষণ গল্প করা যেতো। বলা যেতে দুটো সুখ-দুঃখের কথা, স্বপ্ন ভাঙার পর কতটা দুঃখ হয়েছিলো সেইসব। বলা যেত একটা ভয়াল রাত কীভাবে সুন্দরী সাপের মত শীতল হয়ে শরীর বেয়ে উঠে গলা পেচিয়ে ধরে। অনেক হয়েছে এসব যদিও। তবুও আরও ইচ্ছা হয় একটা বিকালে নির্জন হয়ে তুমি এসে  গা ঘেঁষে বসো। তোমার শরীরের ওম পাই। পৃথিবীর পরে আমাদের কোনো বন্ধু নেই। কিছু স্বপ্ন আছে বলে আমরা অসম্ভব আবেগে মত্ত হয়ে ছুটে বেড়াই প্রতি দুপুরবেলায় ঠিক সূর্যের মত করে। এত্ত কিছু!  কত কিছু!  তবুও আমাদের যেমন হবার কথা ছিল আমরা তেমন হতে পারি না। ফিরে ফিরে আসি ব্যক্তিগত কুয়াশার কাছে। আমাদের যৌথ  কোনো স্বপ্ন নেই। ছিল না। গড়তে পারিনি আমরা। যে যৌথতায় কোনো স্বপ্ন নেই সই যৌথতা আমরা কি চেয়েছিলাম বলো? আমাদের গল্পে ভরা বিকাল, দুঃখে ঢোবা পুকুর আর রূপকথার মত সব রাত জমানো আছে অঢেল শুধু যৌথ কোনো স্বপ্ন নেই।

《》《》《》《》《》《》《》《》《》《》《》《》

বুকের ভেতর যে নদী

তোমার মুখ মনে পড়লে একটা নদীর কথা মনে পড়ে। যে নদীর পাড়ে আমরা নিশ্চয়ই যাব কখনো। যে নদীর দিকে চেয়ে আমরা দেখে ফেলতে পারি জোয়ার-ভাটা

তারপর এমন একটা বাদলা রাতের পূর্ণিমা।

আমাদের একান্ত যে ভাষা,

যে ভাষার বর্ণমালা জানি শুধু আমরা দু’জন

যে ভাষায় সুর তুলে বেঁধে ফেলতে পারি কোনো একটা গান

সে ভাষায় তোমাকে কাছে ডাকি,

এসো,

আমার বুকের উপর হাত-পা তুলে ঘুম যাও।

তোমাকে নদীর ঢেউয়ের শব্দ শুনাই,

ছলাৎ

ছলাৎ

ছলাৎ

ফড়িংয়ের পাখার কাঁপনের হাওয়া মাখাই তোমার গালে

এসো,

বুকের সমস্ত জমিন তোমাকে লিখে দিই।

এসো,

আমরা নদীর গান শুনি

তারপর ভাঙনের শব্দ।

ফেলে আসা শহরের সব পাপ ধুয়ে ফেলি একে একে।

ধুয়ে ফেলি দুষিত ফুসফুস আর যাপনের স্মৃতি।

তোমাকে নদীর কাছে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো চাওয়া নেই আমার।

এসো,

তোমাকে সে নদীর কাছে নিয়ে যাই

যে নদী আমার জন্মের শব্দ জানে।

আরো পড়ুন

Scroll to Top