মৃত্যু স্মৃতি নিয়ে চা-আলাপ ।। চাঁদনী মাহরুবা
চোখেরবালি ২য় পত্র
পৃথিবীর পুরাতন যীশু কাল ধরে,
কোন এক জেসাস হেঁটে চলেছে কোথাও!
ধুলো লীন চোখেমুখে, লেগে আছে সহস্র সফরনামা।
ক্রুশের কিছু ব্যথা কুয়াশায় ঝরে গেছে চুপচাপ।
পবিত্র খেজুরফল ফুটছে শীতের শেষে।
সুদীর্ঘ পথ জুড়ে তার, কেউ পড়ে চলেছে বিষন্ন বাইবেল।
♦
যাত্রা অশুভ
রাশিফলের ভেতর ঝরছে অজস্র যাত্রাপথ।
নিরেট রাস্তায় সাইসাই করে ছুটছে অশুভচিহ্ন। বাড়ি ফেরার কাছেই উবে গেছে আয়ুরেখা। একধারে বরফের মতো জমাট রক্ত।
পোড়া হাড়-মাংস আর মবিলের ঘ্রাণ উপ্রে চলে যাচ্ছে শ্রুত গন্তব্য….
বাস, ট্রাম অথবা সময়কাল।
হে মহামতি, এবার তবে যাত্রাবিরতি নিন।
শুনুন,পা হারাবার দুক্ষ কেমন!
আমি কোথাও আমার জুতোজোড়া খুঁজে পাচ্ছি না।
♦
মৃত্যু স্মৃতি নিয়ে চা-আলাপ ১
কবর থেকে ধীরে মুছে যাচ্ছে জন্মদাগ!
গ্রীষ্মের সামান্য আগে…
এখন শীত নাই তবু বুকের মধ্যে শীতরাত্তির।
আমার দিকে তাকায় আছে সমস্ত বিরান ভুমি…
আজানের সাথে কিছু বিষাদাক্রান্ত ধুলা ছাড়া
এখানে আর কেউ আসে না।
মাহরুবা….
মানুষ কিভাবে ঘুমায় একা?
♦
মৃত্যু স্মৃতি নিয়ে চা-আলাপ ২
হু হু করে বাড়ছে কান্নার রোল।
ঘরবাড়ি উঠোনজুড়ে গোলাপ জলের সু-তীব্র ঘ্রাণ। পিপুলপাতার মায়া ছিড়ে চলে যাচ্ছে তার ছায়া।
আমার শরীরের ভেতর কে যেন খলবল করে কথা বলে যাচ্ছে
কাঁদো কেন রুবা?
তুমি কি আমারে দাও নাই ফাঁকি কখনো? ছুটি হইলে যাও নাই বাড়ি?
………….
মানুষের শরীর মুলত একটা ভান। শরীরের ভেতর আসলে সে নাই। একটা উড়ালপংখীর জীবন নিয়া তুমিও তো একা একা দেহবন্দি হইয়া আছো।
দেখ, পিপুলের জীবন নিয়া আমিও ঠায় দাঁড়ায় আছি জন্মের নিকটে…..
♦
আফটারনুন স্যাডনেস….
এইসকল সন্ধ্যা রাত্তিরে বুকের ভেতর শীতভাব নিয়া ফিরি। ঘাটে মাঠে তোমার মুখের মতন বিরান ছায়েল। শাখ হইতে পাতাদের খসে পড়বার আওয়াজ শোনা যায়। দূরে কাহারো ঘরে খিলি দিবার শব্দ। উননে ভাঙিতেছে ধোয়া। একা পাতে পরে আছে লাউডগা সালুনের দুঃখ।
এইসব বিষণ্ণ রাত্তির….. ঝোপঝাড় মাচানের কোনায়। তোমার শহরেও কি ঘনায়???