কবিতা 

নাহিয়ান আতিকের পাঁচটি কবিতা

০১

আমাদের একাকী একাকিত্বকে অস্বীকার করে
প্রায়শই দেখি জলে ভাসছে হাসের মত সাদা একটা বক্ষবন্ধনী,

তার চারপাশে নীল-কাল মাছেদের রাজ্য।
তোমার পাশে শুয়ে আমি ভেড়া গুনি আর চুমু খাই।

চুমু খেলে ঘুম আসে তাই আবার ভেড়া গুনি
কোনদিন নেকড়ে এলে আমরা সঙ্গম করি নৃত্যের তালে তালে
যিশুর চেহারার স্নিগ্ধতার মত এক নরম ভোরে কফি ভর্তি বাথটাবে শুয়ে দেখি
আমাদের ঘরদোর ভেঙে যায় ।
আমরা ঘর তুলতে পারি না
তাই নতুন নতুন দেয়াল তুলি।
সম্পর্কেরা একটু একটু করে দূরত্ব তৈরি করে
আমি চাই বা না চাই
একমাত্র মৃত্যুই প্রতিদিন একটু একটু করে নিকটে আসে।

০২
তোমার সামনে ঝুরঝুর করে
ঝরে পড়ে আমার পাহাড়
অথচ তোমার বৃষ্টিরা চিরকাল আবদ্ধ
পানিচক্রে।

যে প্রেম অবশ করে, সেই প্রেমের কসম
স্মৃতির সংগ্রাম শুধুই মেঘ হবার জন্য।।

০৩
ডোরাকাটা নীল আকাশের আড়ালে ঝাঁপসা হয়ে আসে পর্বতসারিদের

বর্তমান 

ফেলে আসা কাফের সময়ের টেলিগ্রাম যেন এই মেঘমালা,
বহুদুর হতে বিভ্রান্ত ঘ্রাণ ক্রমশ ধায় আমার তাবুর দিকে ;

ঝড়ের মতন আচ্ছন্ন করে ফেলে সমস্ত অস্তিত্ব।

তোমার সবটুকু রুপ পড়তে গিয়ে দেউলিয়া পাঠক আমি আর ফিরতে পারিনি কোনদিন কবিতায়।

০৪
স্বল্পভাষী আমার জমানো গল্প আগ্রহী করেছিল তোমাকে। ভাবতে না জানি কত কী আটকে আছে আমার ফুসফুস জালে । আমি বলতাম, ভেতরে আটকে থাকা কথাপাখিরা ভেতরেই থাক । বললেই কি তারা আকাশ পাবে?? আমিতো পালক হতে চাই না। সংগ্রহে থাকুক ওজন।
একবার হালকা হবার জন্য তুমি একটা বাদামি বিকেল দিয়েছিলে। বলেছিলে পালকের মতন হালকা হয়ে যাব। পাখিনূভুতির লোভে জমানো জারুল ফুল দিয়ে বিকেলটা কিনেছিলাম। আজ ভাবি, সব ভার পাখি হয়ে গেছে, সেই হালকা হবার বিকেলটাই কেবল ভারী হয়ে রয়ে গেল বুকের ভেতরে।

০৫

তুমি একখন্ড চাঁদ ;
চাঁদের আকর্ষণে জোয়ার আসে আর আমার পৃথিবীটা ডুবে যায় আমারই ভিতরে।
তবুও তোমার আকাশে তুমি একখন্ড চাঁদ হয়ে রও। রাত দখল করে বাঁচো।

অনন্ত নক্ষত্র শোভিত রাত তোমার প্রেমিক হয়ে ফুটে থাকে।
আমার বুকে শুধুই জমা হয় লবণের ঘ্রাণ।

Related posts