অক্ষর প্রবালের ৫ টি কবিতা
বুনট নীতি
বিচ্ছিন্ন সমুদ্র মাদকতায় উড়ে গেছে নেশাতুর ঠোঁট
তাই পথ হারিয়ে পা খুঁজে নেয় জুতোর গভীরতা।
পথ কখনো বোঝে না ক্ষুধার গৌরচন্দ্রিকা-
শুয়ে থাকে ঘাসের কান ঘেঁষে বিমূর্ত পথচারীর পা’য়।
আবেগ অতি আঁঠালো কিসিমে’র ছাই
গুটি হয়ে জমে যায় আঁটুলির ন্যায়।
সঞ্চিত দুঃখ তবু খুঁজে ফেরে ঠোঁটের আয়ুরেখা।
যার গোড়ায় লুকিয়ে আছে আয়ুর্বেদি প্রেম।
কিন্তু জানে না-
মাছ বিনিময়ের দুপুরে এদেশে মাছের গন্ধ- ‘হারাম’।
ফ্যাকাশে কাহন
দৃশ্যের শেষে দাঁড়ি দিয়েও তার শেষ নামছে না এখনো।
এখনো রঙিন কিশোর তুফান
চারিদিকে সায়ানাইড ছিটিয়ে সব স্তব্ধ করে দেবে একদিন।
তবুও দৃশ্য ছুটছে ঘোড়ার খুঁড়ে
আজ অব্দি
সমুদ্র অব্দি
পাহাড় অব্দি
গড়িয়ে পড়ছে সময় ক্লান্ত হয়ে।
এখন একটি দিনে তিনটি ঋতু ঘুরে যায়
পর্দা ফিরে ফিরে আসে যায়
শুধু মঞ্চ-ই একা একা হাসে।
সিনেমাটিক প্রথম চুম্বন
ক্যামেরা তলিয়ে গেছে ওয়াইনের ভীড়ে
যেখানে সমস্ত নায়িকারা লাল হয়ে বসে আছে বরফের খোঁয়াড়ে।
বরফ,তুমি ধুমকেতুর পাছায় স্থির হয়ে বসো
কয়েকটা ফ্ল্যাশ ফেলি।
গান হোক,ব্যাকগ্রাউন্ডে ভেসে বেড়াক কয়েকটি মাতাল চাঁদ।
এই দূর্বল পৃথিবীতে কয়েকটি চাঁদ দরকার
কারণ সবকটি ওক গাছ আজ নিঃসঙ্গ।
কেউ আছো? মেঘেদের পায়ে ঘুঙুর বেঁধে দাও
শব্দের রিফলেকশনে কেঁপে উঠুক অ্যাশট্রের বিষন্ন ছাই।
সময় ক্রমিক
সময় বদলে যায় ফিরে আসার প্ররোচনায়।
নগদের খাতায় ধান এঁকে এঁকে যে সময় গিয়েছে চলে-
পিলখানার ইটে।
মৃত হরিণের শিঙে এক ঝুড়ি ব্যস্ততা নিয়ে
এক তাল দুঃখ উনুনে রেখে
ভেবেছিলো সে -দৃশ্যকল্পের চেয়ে বয়েসী অতীত ভালো।
পরাজিত আলো উল্কির পিঠে রেখে কম্পাস ঘুড়িয়ে দেখেছে-
পৃথিবী একটা বিষণ্ন পাথর-
খাঁজে খাঁজে ব্যাঙ বসে আছে।
অথচ এই বিভক্ত চোখে মেছো সমুদ্র থাকতে পারতো
অথবা অবেলায় উড়ে যাওয়া একজোড়া জিপসি ঘুড়ি।
নস্টালজিয়া
তরল আয়ুর জগতে দ্বীধাহীন হয়ে যায় দৃশ্য।
সরিষার ক্ষেতে তবু খুঁজে চলে একঝাঁক চোখ-শামুকের মায়া।
এইসব তন্দ্রাচ্ছন্ন শৈশবে ঘুমিয়ে থাকে সে যুগের বাবারা-মুখে টাকার সংশ্রব।
এযুগে গরু হতে হতে কেউ কেউ হয়ে যায় তৎসম,
কেউ কেউ বিলেতি জলে স্কুপ কোরে খুঁজে নেয় একরাশ বৃন্ত।
তবু মধুপের দেশে আজও হয় সংসারী নৃত্য
আর বাবাদের গায়ে লেগে থাকে শামুকের ঘ্রাণ।